`তিস্তা ও  ফারাক্কার বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না বাংলাদেশের মানুষ'

ড. ইউনূসের সঙ্গে মোদির বৈঠক প্রয়োজন ছিল : মির্জা আব্বাস

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ এএম | আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ এএম

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। একই সঙ্গে বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন বিএনপির এই নেতা।

 

 
 

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর শাহজাহানপুরে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা আব্বাস বলেন, এই বৈঠকটা নিশ্চয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটার প্রয়োজন আছে এবং প্রয়োজন ছিল। এই বৈঠকের জন্য আমাদের সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে চেষ্টা করছিলেন। এই সময়ে একটা বৈঠক হওয়ার দরকার ছিল, তারা তা করেছেন। তবে আমি জানি না বৈঠকের অভ্যন্তরে কি আলোচনা হয়েছে। বিশদ না জানলে আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।

 
 
 

হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্পর্কে তিনি বলেন, হাসিনার প্রত্যাবর্তন এবং এই বিচার সময়ের দাবি, জনগণের দাবি, আমাদের দাবি। যদি শুধুমাত্র শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কথাবার্তা হয়ে থাকে, তাহলে আমি একটু যোগ করতে চাইবো, উনার (শেখ হাসিনা) যেসব সাঙ্গ-পাঙ্গ আছে সেখানে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদেরও যেন সঙ্গে ফেরত পাঠানো হয়। ভারতের উচিত শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে পাঠিয়ে দেয়া। যাতে তার বিচারটা হয়। কারণ একটা ফ্যাসিস্টের বিচার হওয়া খুব জরুরি। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য না সারা বিশ্বের জন্য এটা খুব জরুরি। কোনো ফ্যাসিস্ট কখনো বিনা বিচারে যেতে পারে না।

 

 
 

তিনি বলেন, বৈঠকে তিস্তা নিয়ে কথা হয়েছে। তিস্তা বাঁধ নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নাই। তিস্তার পানি আমাদের দিতে হবে এবং তিস্তা বাঁধের প্রয়োজনীয় সংস্কার আমাদের করতে হবে। তিস্তা ও  ফারাক্কার বিষয়ে নিয়ে বাংলাদেশ কোনো ছাড় দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ একটা শক্ত অবস্থানে আছে। ভারতের সাথে যেসব অসম চুক্তি বিগত সরকারের আমলে হয়েছে এখন সেসব চুক্তি বাতিল করা দরকার। যেসব অসম চুক্তি কার্যকর হয় নাই সেগুলো বাতিল করতে হবে। 

 

 

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটির এই সদস্য বলেন, নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আমরা অনেক কথা বলেছি। এক গ্রুপ আছে দেশে, আরেক গ্রুপ আছে বিদেশে। যারা নাকি নির্বাচনকে বাদ দিয়ে সংস্কারের কথা বলছেন। আবার বলার চেষ্টা করছেন সংস্কারের কথা শুনলে নাকি বিএনপির মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আমার এখানে তীব্র আপত্তি। বিএনপি কখনো সংস্কারের বিপক্ষে নয়, বিএনপি বরাবর সংস্কারের পক্ষে, একই সঙ্গে বিএনপি নির্বাচনেরও পক্ষে। দুইটারই প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমন সংস্কারের পক্ষে বিএনপি নয় যেটি দেশের জনগণের স্বার্থে, জনগণের অধিকারের বাইরে চলে যাবে।

 

 

অনলাইনে কিছু কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, গতকাল দেখলাম এক ভদ্রলোক দরবেশ সালমান এফ রহমানের টাকা খেয়ে মোটা হয়েছেন, স্বাস্থ্য ভালো করেছেন, চেহারা সুন্দর করেছেন। তিনি লম্বা লম্বা কথা বলেন, দেশের বাইরে থেকে। খুব দুর্ভাগ্যজনক যে, উনি গতকাল আমার সম্পর্কে খুব বাজে কথা বলেছেন। তো বলতে থাকুক।

 

 

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমি ঢাকার মানুষ। আমার বাবা-মা ওদের মতো গালি দেওয়া শেখায়নি। ওরা আসলে মানুষ নয়, অন্য জাতি। যারা দরবেশের টাকা খেয়ে শরীর স্বাস্থ্য ভালো করে, এ দেশের রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে কুৎসা রটনা করে, গালিগালাজ করে, তাদের দেশের জনগণ মেনে নেবে না। তারা আমার সম্পর্কে, আমার দলের সেক্রেটারি জেনারেল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার পরিবার সম্পর্কে বাজে খারাপ ভাষায় কথাবার্তা বলা শুরু করেছে। অপেক্ষা করুন,ওরা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবকেও ধরবে। ওরা চাচ্ছে কি? ওরা বিএনপি, আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য কাউকে ভালোবাসে না, ওরা ভালোবাসে ভারতকে।ওরা চায় এ দেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তার করতে। 

 

 

তিনি বলেন, ভারতের কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠীকে বসাতে পারে, ওই সমস্ত লোকজনদের জন্য ওরা কাজ করছে। এই গ্রুপটি, এই শুকুরের গোষ্ঠী কখনো বাংলাদেশে কোনো সরকারকে স্থিতিশীল থাকতে দেবে না। আমি আজকে হলফ করে বলছি, এই গোষ্ঠী দেশকে স্থিতিশীল থাকতে দেবে না। কখনো আমার বিরুদ্ধে, কখনো অমুকের বিরুদ্ধে লেগেই থাকবে। ওরা ইউটিউবে পয়সা কামাচ্ছে এসব মিথ্যাচার, কুৎসা রটনা করে। ওরা যে ভাষায় কথা বলছে, আমি আর বললাম না। আমি বন্দে আলী মিয়ার কবিতাটাই বলতে চাই, কুকুরের কাজ কুকুর করেছে, কামড় দিয়েছে পায়ে, তাই বলে কি কুকুরকে কামড় দেওয়া মানুষের শোভা পায়?


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

হাইকোর্টের ৪৮টি বেঞ্চ গঠন, রোববার থেকে চলবে বিচারকাজ
‘বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই, দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন চলমান থাকবে’
১ মে থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদনকারী সব খামার বন্ধ ঘোষণা
ভারতের ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করতে লিগ্যাল নোটিশ
আমাকে বাংলাদেশী বলবেন না, টিউলিপ সিদ্দিকের হুঁশিয়ারি! ভিডিও ভাইরাল
আরও
X

আরও পড়ুন

মোংলায় বজ্রপাতে বিএনপি নেতার মৃত্যু

মোংলায় বজ্রপাতে বিএনপি নেতার মৃত্যু

ব্যাংকের ভেতরেই প্রতারক চক্রের ফাঁদে নারী!

ব্যাংকের ভেতরেই প্রতারক চক্রের ফাঁদে নারী!

শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একমত চীন ও মালয়েশিয়া

শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একমত চীন ও মালয়েশিয়া

হাইকোর্টের ৪৮টি বেঞ্চ গঠন, রোববার থেকে চলবে বিচারকাজ

হাইকোর্টের ৪৮টি বেঞ্চ গঠন, রোববার থেকে চলবে বিচারকাজ

কালীগঞ্জে পৌরসভাকে পরিস্কার রাখতে প্লাসটিকের  ডাস্টবিন স্থাপন

কালীগঞ্জে পৌরসভাকে পরিস্কার রাখতে প্লাসটিকের ডাস্টবিন স্থাপন

‘আগামী মাসে দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া’

‘আগামী মাসে দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া’

তামাকের প্যাকেট দেখিয়ে পাকিস্তানী এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিদ্ধস্তের খবর দিলো ভারতীয় মিডিয়া!

তামাকের প্যাকেট দেখিয়ে পাকিস্তানী এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিদ্ধস্তের খবর দিলো ভারতীয় মিডিয়া!

পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা : আরাভ খানের যাবজ্জীবন

পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা : আরাভ খানের যাবজ্জীবন

সদরপুরে স্বর্ণেরবার দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তি গ্রেফতার

সদরপুরে স্বর্ণেরবার দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তি গ্রেফতার

‘বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই, দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন চলমান থাকবে’

‘বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই, দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন চলমান থাকবে’

সালথায় ডাকাত দলের ৫ সদস্য আটক

সালথায় ডাকাত দলের ৫ সদস্য আটক

নগরীতে পানি সরবরাহ বন্ধের হুমকি

নগরীতে পানি সরবরাহ বন্ধের হুমকি

অবৈধ ভাবে ভারতের অনুপ্রবেশকালে দুই যুবক বকশীগঞ্জ সীমান্ত থেকে আটক !

অবৈধ ভাবে ভারতের অনুপ্রবেশকালে দুই যুবক বকশীগঞ্জ সীমান্ত থেকে আটক !

কর্ণফুলীতে ৫ টাকা বেড়েছে ঘাট ভাড়া; বিপাকে পড়েছেন এই পথে চলাচলকারী যাত্রীরা

কর্ণফুলীতে ৫ টাকা বেড়েছে ঘাট ভাড়া; বিপাকে পড়েছেন এই পথে চলাচলকারী যাত্রীরা

৫০ লাখ ডলারে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ, বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু

৫০ লাখ ডলারে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ, বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু

রাঙ্গাবালীতে দাখিল পরীক্ষায় অনিয়ম, ১৪ শিক্ষার্থী সাসপেন্ড ও ৫ শিক্ষককে জরিমানা

রাঙ্গাবালীতে দাখিল পরীক্ষায় অনিয়ম, ১৪ শিক্ষার্থী সাসপেন্ড ও ৫ শিক্ষককে জরিমানা

প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল!

প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল!

স্ত্রী ফিরে না আসায় অভিমানে স্বামীর আত্মহত্যা

স্ত্রী ফিরে না আসায় অভিমানে স্বামীর আত্মহত্যা

খুলনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুলি, আতঙ্কিত নগরী

খুলনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুলি, আতঙ্কিত নগরী

তৃণমূল থেকে সবখানে দুর্নীতি করেছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা : অ্যাড. সৈয়দ শাহীন

তৃণমূল থেকে সবখানে দুর্নীতি করেছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা : অ্যাড. সৈয়দ শাহীন